তন্ময় বীর



পীযূষকে যেভাবে আঁকা যায়

তন্ময় বীর



পীযূষ চলো নির্বাণের মঞ্চ থেকে নেমে গিয়ে কিছুটা হেঁটে আসি ইন্ডিয়া গেটের নির্মেদ অক্সিজেনের হরিৎ মাঠের ভেতর। দ্বিজেন্দ্রগীতির কথা মনে পড়ে? অতুলপ্রসাদী আ মরি বাংলা ছলাৎ কৃষ্ণযমুনার পাড়ে বসে কুয়াশা বিকেলে?


আসলে আমরা জেনে গেছি; দেখেছি বাংলার বিস্রস্ত চুলের খোঁপা ছড়িয়ে পড়েছে জম্বুদ্বীপের আসমুদ্র হিমাচলে। আমাদের বুভুক্ষু করপুটে সিন্নি আর গুরুদুয়ারের লঙ্গর মিশে গেছে নিরন্ন ঋতুতে। কত চন্দ্রাবতীর চন্দ্রকলা লাশ ভেসে গেছে বরুণা অসীতে আর লোহিত সিন্ধুর সাগরে I


আমরা দেখেছি বর্জাইস ফন্টের পাশে লাইনো হরফ আর ইউনিকোড ক্রমশ লতিয়ে উ'ঠে মধুমাধবীর মতো সহকার শাখা আলো ক'রে আছে পলাশীর বাগান আর লোধি গার্ডেনের গেট।


যে দুই আঙ্গুলের মাঝে সিগারেট ধরি ঠিক তার পরের ফাঁকে কলম বসাই। কালি খুব পোড়ায়, ডোবায় ভাসায়-- ভাষার অকূল পাথারে ! ভীষণ সুখাসুখের মাঝখানে আলুথালু বসিয়ে রে'খে যায় স্টক এক্সচেঞ্জের দারুন উন্নতির দিনেও দীপঙ্কর দত্তের মতো। আমরা কেউ তরুণ তরাই, কেউ উদ্বাস্তু শিবিরের, কেউ নিজেই কেটেছি নিজের শিকড়; কেউ সমুদ্রের ঢেউ গুনি, কেউ জঙ্গলের হাত ধরে নতুন নাচের তাল শিখেছি দারুণ ! মাথায় পালকের গান আর ঢোলকের আওয়াজ একসাথে উৎসবে মাতাল। কখনও হঠাৎ ঘুমের মাঝে খঞ্জনী বেঁজে ওঠে আজানের আগে।


পীযূষ আমরা জানি দুঃখিনী বর্ণমালার কোথায় কোথায় কাঁটা বিঁধে আছে ! বোমারু বিমান দিয়ে কোথায় শানাতে হয় ছুরি তুমি তার কিছুটা জানো। তার চেয়ে বেশি জানো আসলে প্রতিরক্ষা খুব কঠিন নিশ্চিন্ত চেষ্টাহীন ভেসে যাওয়ার চেয়ে। নিজেরটুকু বজায় রেখেও মিলিয়ে দেওয়া, বিলিয়ে দেওয়া কঠিনতর খুব।


দিল্লির দেহলিজে যে দীপ জ্বালানোর কাজ নিজেই নিয়েছো নতুন সময়ে জ্বালাও জ্বালাও আরও এবং জাগাও নিজেকে। আমরা শুধু তালি বাজাতে জানি। হয়তো তাল মেলাতেও কাউকে একদিন পেয়ে যাবে কালের কুতুব মিনারে।