মিতালি বসাক
পীযূষ নামের অর্থ অমৃত
মিতালি বসাক
কবে কখন কীভাবে কোথায় কেমন করে পীযূষ , মানে পীযূষ বিশ্বাস আমাদের ঘরের সাহিত্য আড্ডায় হাজির হয় আজ তা সেরকম মনে পড়ছে না।তবে সে যেহেতু লেখালেখির সাথে যুক্ত তাই মনে হয় আইআইটিতে থাকাকালীন কোনো একসময় থেকে আমাদের ঘরে তার আসা যাওয়া শুরু হয়। তবে বিশেষ করে মনে পড়ে দীপংকরের মৃত্যুর পরে পীযূষ নিজ দায়িত্বে ওঁর শ্রাদ্ধ শান্তির আয়োজন করে।আমরা তখন আইআইটি ছেড়ে বিন্দাপুর ডিডিএ ফ্ল্যাটে এসে গেছি। ও এ বাড়িতে আসা শুরু করে। একটু জোরে কথা বলে ও লেখা পাঠ করে। যোগাযোগ বাড়তে থাকে। আপন হতে থাকে পরিসরে।
পীযূষ নামে যারা, তারা উচ্চাকাঙ্ক্ষী এবং দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বলে পরিচিত। তাদের সাফল্যের জন্য দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি থাকে এবং লক্ষ্য অর্জনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে ভয় পায় না। তারা খুব সুসংগঠিত এবং যেকোনো কাজ সম্পন্ন করার জন্য তাদের সময় কার্যকরভাবে পরিচালনা করতে পারে। তাদের উদাহরণ দিয়ে নেতৃত্ব দেওয়ার স্বাভাবিক ক্ষমতা রয়েছে। আত্মবিশ্বাস এবং দৃঢ়তা তাদের কিছু ইতিবাচক বৈশিষ্ট্য। তাদের ব্যক্তিত্ব এমন যে তারা তাদের কাজের দায়িত্ব নিতে ইচ্ছুক এবং নির্ভরযোগ্য এবং বিশ্বাসযোগ্য। তাদের চালিকা শক্তি সাফল্য এবং অর্থ। কখনও কখনও, তারা বস্তুবাদীও হতে পারে।
পাকেচক্রে আমরা পীযূষের বাড়ির কাছেই মহাবীর এনক্লেভে উঠে আসি।এক পাড়ায় হওয়ায় আরও জোড়ালো হতে থাকে সম্পর্কে। বিপদ আপদে তো আছেই। ওর গাড়িতে ভোরবেলা রবীন্দ্রভবনে প্রভাতী অনুষ্ঠানে প্রায় প্রতিবার যাই। ও হ্যাঁ ,ওর স্ত্রী বিউটি কখন যে দিদি দিদি বলে জড়িয়ে গেল আমাদের আপন মহলে ,তা মনে নেই। অসম্ভব প্রাণবন্ত উৎসাহী মেয়ে বিউটি। ওদের সুখের সংসার লোভনীয়। ভালো থাকুক ,সুখে থাকুক।
এরমধ্যে কয়েক বছর আগে মহাবীর এনক্লেভে প্রণব (দত্ত) এসে জুটলো। হলো প্রাণজি প্রণব পীযূষ নামের ইংরেজি অক্ষর পি নিয়ে পিথ্রি। আমাদের ঘরে নিয়মিত আড্ডা চলে।বাকবিতণ্ডা তো আছেই। ওরা দলবেঁধে বাংলাদেশ সফরে গেল। যাওয়ার আগে ও পরে কতবার মিটিং ইত্যাদির আমি সাক্ষী। ওরা একই রংয়ের পাঞ্জাবি পরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যায়।
যতদূর মনে পড়ে ২০২২ সালে এরা একটি সাহিত্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করে পাশের পোর্টাকেবিনে। শ্রদ্ধেয় লেখিকা তসলিমা নাসরিন আসেন সে অনুষ্ঠানে।” দিল্লির নির্বাচিত বাংলা কবিতা “ সংকলনটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়। আমরা গান গেয়েছিলাম। খুব আনন্দ হয়েছিল সেবার।
এইতো সেদিন আবার ওরা গেল বাংলা ভাষার প্রাণ বাঁচাতে উত্তরাখন্ডের শক্তি ফার্মে। পীযূষের গাড়িতে ,ও লং ড্রাইভ করতে ভালো বাসে।মাঝে মাঝেই শুনতে পাই ওরা গাড়ি করে বেরিয়ে গেছে ,,দিল্লির বাইরে। এমনকি কলকাতাও গেছে গাড়ি নিয়ে গতবছর। বাহবা দিতেই হয়।
প্রাণজি বসাকের উসকানিতে শুরু হয় পিথ্রি ঘরোয়া পিকনিক। যা ঘুরে ঘুরে এক এক জনের বাড়িতে হয়।এই শেষবার পীযূষের ঘরেই হলো কাতলামাছের পিকনিক। এসব নিয়ে বেশ আছি আমরা ,দিল্লির দক্ষিণ-পশ্চিম জেলার মহাবীর এনক্লেভ বেঙ্গলী কলোনিতে। বয়সে পীযূষ সবচেয়ে ছোট , ৫০ এ পড়ছে। ওর দীর্ঘায়ু কামনা করি। সুখে ও আনন্দে থাকুক।
পীযূষ মানেই তো অমৃত। সে অমৃত ছড়িয়ে পড়ুক চারদিকে।
প্রাণজি বসাকের কথায় বলি — জয় বাংলা কবিতার জয়।
Tags:
ক্রোড়পত্র