গোপাল লাহিড়ী

ফ্যাকাশে স্বপ্ন

গোপাল লাহিড়ী




আজ স্বপ্নকে ভীষণ ফ্যাকাশে দেখাচ্ছে
ভিতরমহলে কিসের যে এত হীনতা বুঝি না,
পুরনো আদল বদলে বদলে যেতে থাকে.
ভাঁজ করে তোলা থাকে ঘুমপাড়ানি গানের বইগুলো.
ইমেলে প্রতিদিন এসে পৌঁছয় কোকাকোলা অ্যাওয়ার্ড
মন্দ লাগে না এই ভার্চুয়াল চোরপুলিস খেলা,
তবুও স্বপ্নকে এখন আর খুশি করতে পারি না
এ যেন একটু দীর্ঘশ্বাসের, একটু ভয়েরই,
হয়ত বা স্বপ্নরা এখন দীর্ঘ ছুটি পেতে চায়
মায়াপুরী তৈরী করতে করতে তারা আজ ক্লান্ত,
এই যে অবাধ সঞ্চরণ, এ আর ভালো লাগে না.
অলক্ষ্যে আন্দোলিত হয় মনের অধিপতি আর কেউ.
স্বপ্নের মুখ যেন সারি সারি সাদা পাথরের স্তর
কতরকম ফিসফিসানি, চোখের কোণে তীব্র জ্বালা,
গড়িয়ে পরে কান্নার ছোট ছোট ফোঁটা,
আবার নতুন করে বোধহয় ভাবতে হবে স্বপ্নকে নিয়ে.



স্বপ্নের পৃথিবী​




আর কিছুক্ষণ পরে উঠে আসবে তুমি নদী থেকে
একটু একটু করে ভিজে যায় স্বপ্নের পৃথিবী
নিয়মের সুতো ছিঁড়ে ছড়িয়ে পড়ছে হেমন্তের ঘ্রাণ

খুঁজতে খুঁজতে চলে যাই বীজের উৎসবে
না আলো না অন্ধকার
এক মর্মরিত স্তব্ধতা

রূপে রূপান্তরে শহরের দাঁত ও নখ ঘিরে ধরছে
সমস্ত ইজেল
তুলিতে মিশে যায় মুখ আর মুখোশ

নির্জনতা হিমশিখা ইশারার
অববাহিকায় দাঁড়িয়ে
কেবল মনে হয় তুমি সেই রাত্রি তুমি সেই ভোরবেলা।



অবিশ্বাস




তোমার চোখে পারাপারের নদীর জল
আমি জলের ভাষা কোনোদিন বুঝিনি
তোমার শরীরে ডালপালা পোড়ানোর আগুন
আমি আগুন কেন পোড়ায় জানি না
রোদে ছায়ায় পড়ি স্রেফ খাতার কাটাকুটি.

কোনো নিষেধের প্রাচীর আমাদের মধ্যে ছিল না
মৃত্যুর শিয়রে গিয়ে দাঁড়াতে পারতাম
শূণ্য দুটি হাতে কিছু ঝরা পাতা তুলে দিতে পারতাম.
যেন কোনো ভূমিকায় আমরা নেই.
ভুল হয়েছে, হয়ত ভুল হয়ে গেছে কোথাও.


নিরিবিলি একটা ডুব মনের অতলান্ত গভীরে,
কতটা কঠিন তার কোনো নমুনা, কোনো ব্যথা নেই আজ,
নিভৃত একটু জায়গা, নিঃসীম অন্তর্দাহ আর গ্লানি,
কুন্ঠিত হয়ে থাকার দিন পিছনে ফেলে চলে যায়
অবিশ্বাসকে পাশে নিয়ে আর কখনো হেঁটে যাব না.