অশোক নন্দ

মহাবীর এনক্লেভের বুকে এক বাঙালি স্বর

অশোক নন্দ


 
আমার নাম অশোক নন্দ। দীর্ঘকাল ধরে দিল্লির বুকে বসবাস করছি, আর এই শহরের বাঙালি কমিউনিটির সুখ-দুঃখ, উত্থান-পতনের সাক্ষী থেকেছি। পেশাগত জীবনের পাশাপাশি আমার মন সবসময় পড়ে থেকেছে বাংলা ভাষা আর সংস্কৃতির টানে। সেই টানেই আমি ঘুরে বেরিয়েছি দিল্লির বিভিন্ন প্রান্তে, যেখানেই বাঙালির আনাগোনা, যেখানেই বাংলা সংস্কৃতির চর্চা – সে চিত্তরঞ্জন পার্কের শিব মন্দিরই হোক, জনকপুরি ডি ব্লক, বৈশিষ্ট পার্ক, মুখার্জি নগর কিংবা ট্যাগোর গার্ডেন। এই পথচলাতেই একদিন পরিচয় হয়েছিল এক তরুণ কবির সঙ্গে – পীযূষকান্তি বিশ্বাস।

সালটা সম্ভবত ২০১০ হবে। সফদরজঙ্গের মাতৃমন্দিরে সর্বভারতীয় বঙ্গভাষী সমিতির আসরে প্রথম দেখি ছেলেটিকে। শান্ত, সৌম্য, কিন্তু চোখেমুখে এক গভীর চিন্তার ছাপ। পরে আলাপচারিতায় জানতে পারলাম, সে থাকে মহাবীর এনক্লেভে। শুনে বেশ অবাকই হয়েছিলাম, কারণ আমিও তখন মহাবীর এনক্লেভের বাসিন্দা। আমি ওখানে এসেছিলাম তার কিছুদিন আগে, ১১ মার্চ ২০০৭ সালে। আসার মূল উদ্দেশ্যই ছিল এমন একটা ভালো বাঙালি বসতি এলাকায় থাকা, যেখানে আমি বাংলার সংস্কৃতির পরিমণ্ডলে নিজেকে জড়িয়ে রাখতে পারব, ছেলেমেয়েদের বাঙালিয়ানার মধ্যে বড় করতে পারব। তাই নিজের এলাকার একজন তরুণ কবির সঙ্গে বাইরের কোনো অনুষ্ঠানে পরিচয় হওয়াটা আমার কাছে একাধারে বিস্ময় এবং আনন্দের ছিল। সেই প্রথম পরিচয়ের পর থেকে পীযূষের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ক্রমশ গভীর হয়েছে, স্নেহের এবং শ্রদ্ধার। আজ যখন তার পঞ্চাশতম জন্মদিনের প্রাক্কালে তার সম্পর্কে কিছু লেখার সুযোগ এসেছে, তখন আমার সেইসব দিনের কথা, মহাবীর এনক্লেভের কথা, আর পীযূষকে যেমনভাবে দেখেছি, সেইসব কথাই তুলে ধরতে চাই।

 
মহাবীর এনক্লেভে যখন আসি, তখন মনে একরাশ স্বপ্ন ছিল। শুনেছিলাম, এটি দিল্লির অন্যতম প্রধান বাঙালি কলোনি। আশা ছিল, এখানে এক প্রাণবন্ত বাঙালি সমাজ পাব, যেখানে ভাষা, সাহিত্য, সঙ্গীত, নাটক – সবকিছুর চর্চা হবে। বিশেষ করে এখানকার কালীবাড়ি মন্দিরটিকে ঘিরে আমার প্রত্যাশা ছিল অনেক। আমি মনে মনে ভাবতাম, এবং আমরা অনেকেই গর্ব করে বলতামও যে, মহাবীর এনক্লেভ হলো দিল্লির 'মিনি সি আর পার্ক'। স্বপ্ন দেখতাম, এই কালীবাড়ি একদিন বাঙালি শিক্ষা ও সংস্কৃতির এক প্রধান কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠবে, যার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়বে গোটা দিল্লিতে।

কিন্তু বাস্তবে এসে দেখলাম ছবিটা বেশ ভিন্ন। হ্যাঁ, বাঙালি পরিবার অনেক ছিল, এখনও আছে। কিন্তু সেই একতা, সেই সংস্কৃতি চর্চার প্রতি স্বতঃস্ফূর্ত আগ্রহ – তার বড্ড অভাব ছিল। ধীরে ধীরে দেখলাম, এখানকার সামাজিক পরিমণ্ডল কেমন যেন কলুষিত হয়ে পড়ছে অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, দলাদলি আর ব্যক্তিগত রেষারেষিতে। কালীবাড়ি, যা হতে পারত আমাদের ঐক্যের প্রতীক, আমাদের সংস্কৃতির পীঠস্থান, তা হয়ে উঠল ক্ষমতার লড়াইয়ের কেন্দ্র। এর সঙ্গে যুক্ত হলো আরেকটি সমস্যা – কলোনির জনবিন্যাসের পরিবর্তন। ধীরে ধীরে অবাঙালিদের সংখ্যা বাড়তে লাগল, আর বহু বাঙালি পরিবার বিভিন্ন কারণে এলাকা ছেড়ে চলেও যেতে লাগল।

সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হলো, যারা সত্যিকারের বাংলা সাহিত্য বা সংস্কৃতি চর্চায় আগ্রহী ছিলেন, সেই মানুষগুলো ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে পড়তে লাগলেন। কালী মন্দিরের পরিচালন ব্যবস্থা যাদের হাতে ছিল (বিশেষ করে আমার দায়িত্ব নেওয়ার আগের সময়ে), তাদের অনেকেরই বাংলা সাহিত্য বা সংস্কৃতির প্রতি কোনো আগ্রহ বা দায়বদ্ধতা ছিল না। তারা মন্দির পরিচালনাকে কেবলই এক রুটিন প্রশাসনিক কাজ বা ব্যক্তিগত প্রভাব বিস্তারের ক্ষেত্র হিসেবে দেখতেন। ফলে, বাংলা ভাষা, সাহিত্য বা সংস্কৃতির উন্নতি বা প্রসারের কোনো আন্তরিক চেষ্টাই সেখানে ছিল না। এই উদাসীনতা আর অভ্যন্তরীণ রাজনীতির শিকার হয়ে এখানকার সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চা ক্রমশ উচ্ছন্নে যেতে বসেছিল।

 
এইরকম এক পরিস্থিতিতেই আমার কালীবাড়ি মন্দির কমিটির সঙ্গে যুক্ত হওয়া। আমার এক অত্যন্ত পরিচিত বন্ধু, দিবাকর দে মাধ্যমে আমি মন্দিরের কিছু হিসাবপত্র সংক্রান্ত এবং অন্যান্য সমস্যা সমাধানের লক্ষ্য নিয়ে ম্যানেজমেন্টের কাছাকাছি আসি। শুরুতে আমার পাশে পেয়েছিলাম মিস্টার দিবাকর দে, মনোজ মৈত্র, মিস্টার দেবাশীষ সমাদ্দার, মিস্টার বিদ্যুৎ মুখার্জির মতো কিছু ভালো মানুষকে। কিন্তু পথটা সহজ ছিল না। অনেক লড়াই করতে হয়েছে। মন্দিরের পরিচালন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনার জন্য, বিশেষ করে নির্বাচন পদ্ধতিতে, আমরা সোচ্চার হয়েছিলাম। আগে হাত তুলে ভোট দেওয়ার একটা অস্বচ্ছ পদ্ধতি চালু ছিল। আমরা লড়াই করে সেই প্রথা বন্ধ করে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে নির্বাচনের ব্যবস্থা করি। লড়াই র বন্ধু হিসাবে পাশে পেয়েছিলাম দেবজিৎ কর, সুশান্ত ধর, স্বর্গিয় ধনঞ্জয় ঘাঁটি, রূপক চৌধুরী, সন্দীপ চট্টোপাধ্যায়,মিনতি ভট্টাচার্য,আরও অনেক। সেই নির্বাচনের মাধ্যমেই ২০১২ সালে আমি কালীবাড়ি মন্দির কমিটির জেনারেল সেক্রেটারি নির্বাচিত হই।

জেনারেল সেক্রেটারি হওয়ার পর চেষ্টা করেছিলাম অনেক কিছু করার। আমার স্বপ্ন ছিল কালীবাড়িকে শুধু একটা উপাসনালয় নয়, একটা পরিপূর্ণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে রূপান্তরিত করা। কিন্তু কাজটা যে কতটা কঠিন, তা পদে পদে অনুভব করেছি। ভেতরে জমে থাকা পুরনো জঞ্জাল, দলাদলি, একে অপরকে টেনে নামানোর চেষ্টা – এই সবকিছুর মোকাবিলা করতে গিয়েই অনেকটা শক্তি ক্ষয় হয়ে যেত। তাছাড়া, কমিটির সকলের মধ্যে সংস্কৃতি চর্চার প্রতি সমান আগ্রহ বা দৃষ্টিভঙ্গিও ছিল না। ফলে, বড় কোনো সাংস্কৃতিক উদ্যোগ নেওয়া বা তাকে সফল করা অত্যন্ত কঠিন ছিল। এটা আমার জীবনের একটা বিরাট লড়াইয়ের ইতিহাস।

পীযূষ ও বাংলা সংস্কৃতির প্রতি দায়বদ্ধতা নিয়ে দুটো কথা বলি । এইরকম একটা প্রতিকূল পরিবেশেও আমি কিছু মানুষকে দেখেছি, যারা নীরবে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির জন্য কাজ করে যাচ্ছিলেন। তাদের মধ্যে পীযূষকান্তি বিশ্বাস অন্যতম। আমি নিজে যেহেতু দিল্লির বিভিন্ন বাঙালি অনুষ্ঠানে যেতাম, তাই সাহিত্য জগতের কিছু মানুষের সঙ্গে আমার পরিচয় ছিল। মহাবীর এনক্লেভেও শ্রদ্ধেয় দিলীপ কুমার ব্যানার্জি, শচীপতি ভট্টাচার্য, ধনঞ্জয় ঘাঁটি (ঘাটিদা), স্বপ্না ব্যানার্জি, ডক্টর ভৌমিক, বিদ্যুৎ মুখার্জি – এঁদের মতো গুণীজনেরা ছিলেন। বিদ্যুৎ মুখার্জি মূলত নাটক ও থিয়েটার জগতের মানুষ ছিলেন, পরে পূর্ণেন্দু ভট্টাচার্যও এসে তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন। এঁরা সকলেই নিজেদের মতো করে সাহিত্য বা সংস্কৃতি চর্চা করতেন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, তৎকালীন মন্দির কমিটি থেকে এঁদের কোনোদিন কোনো রকম স্বীকৃতি বা সম্মান দেওয়া হয়নি। কোনো অনুষ্ঠানে হয়তো এঁদের ডাকা পর্যন্ত হতো না! এই অবহেলা আর অসম্মানের কারণেই এঁরা মন্দির বা তার পরিচালন ব্যবস্থা থেকে দূরে সরে গিয়েছিলেন এবং নিজেদের মতো করে ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে চর্চা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এই বিভাজন এবং মন্দির কমিটির উদাসীনতাই এখানকার সাহিত্য-সংস্কৃতিকে রসাতলে নিয়ে গিয়েছিল।

আমি নিজে জেনারেল সেক্রেটারি হওয়ার পর এই অবস্থার পরিবর্তনের চেষ্টা করেছিলাম। আমি দেখেছি, মহাবীর এনক্লেভের সাহিত্যিক পরিমণ্ডলকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য বা তাকে উন্নত করার জন্য পীযূষকান্তি বিশ্বাস এবং শ্রদ্ধেয় দিলীপ কুমার ব্যানার্জীকে রীতিমতো ছোটাছুটি করতে। তাঁরা নিজেদের উদ্যোগে সাহিত্য সভা করতেন, পত্রিকা প্রকাশের চেষ্টা করতেন। আমি বেশ কয়েকবার তাঁদের সঙ্গে বসেছি, তাঁদের উদ্যোগে সামিল হওয়ার চেষ্টা করেছি। পীযূষের সঙ্গে আমার একাধিকবার মিটিংও হয়েছিল। আমরা পরিকল্পনা করেছিলাম, কালীবাড়ি মন্দির প্রাঙ্গণে একটা বড় মাপের সাহিত্য বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করার। অনেকটা এগিয়েও গিয়েছিলাম সেই পরিকল্পনায়, কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন জটিলতায় তা আর বাস্তবায়িত করা যায়নি। এটা আমার একটা আক্ষেপ রয়ে গেছে। তবে আমি চেষ্টা করেছি, অন্তত কালীবাড়ির যে ঐতিহ্যবাহী দুর্গাপূজা, তার সঙ্গে যুক্ত থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানগুলির মানোন্নয়ন করতে, সেগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে। দুর্গাপূজা কমিটির বিভিন্ন দায়িত্বে মনোনিবেশ করে আমি অন্তত এই একটা কাজ ধরে রাখতে পেরেছিলাম।

 
মন্দিরের প্রশাসনিক দায়িত্ব সামলানোর পাশাপাশি আমি ব্যক্তিগত স্তরেও এখানকার সাহিত্য ও সংস্কৃতিমনস্ক মানুষদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতাম। দিল্লির সাহিত্য জগতের বিশেষ ব্যক্তিত্ব, যেমন স্বর্গীয় দেবাশীষ বাগচী, রামপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত ঘোষ, জয়শ্রী রায় ভট্টাচার্য, স্বপ্না বন্দ্যোপাধ্যায় – এঁদের সঙ্গে আমার পরিচয় ছিল। মনে পড়ে, নাট্যকার শ্রদ্ধেয় শচীপতি ভট্টাচার্যের বাড়িতে প্রায় প্রতি রবিবার আমাদের আড্ডা বসতো। আমি, ঘাটিদা (ধনঞ্জয় ঘাঁটি), আর শচীপতিদা – আমরা তিনজন মিলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আলোচনা করতাম সাহিত্য, সমাজ, রাজনীতি নিয়ে। চা-মুড়ি সহযোগে সেই আড্ডাগুলো ছিল আমার কাছে এক বিরাট প্রাপ্তি। আমরা অনেক স্বপ্ন দেখতাম, অনেক পরিকল্পনা করতাম। কিন্তু সেই অর্থে সাহিত্য জগতে আমি কোনো চূড়ান্ত সাফল্য পাইনি বা বড় কোনো ভূমিকা পালন করতে পারিনি। আমার কর্মক্ষেত্র মূলত মন্দিরের ম্যানেজমেন্টের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকে গেছে। তবে, মনের মধ্যে ইচ্ছেটা এখনও আছে। ভবিষ্যতে সুযোগ হলে, পীযূষের মতো উদ্যোগী মানুষদের সঙ্গে বাংলা সংস্কৃতির প্রসারে কাজ করার ইচ্ছে রাখি।

মহাবীর এনক্লেভের ভবিষ্যৎ ও পীযূষের ভূমিকা কিছু কথা বলতে হয় । আজকের দিনে দাঁড়িয়ে যখন মহাবীর এনক্লেভের দিকে তাকাই, তখন যেমন কিছু হতাশা আছে, তেমনই আশাও দেখতে পাই। আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি, মহাবীর এনক্লেভ একটি বাঙালি কলোনি এবং এখানে বাংলা সংস্কৃতির বিকাশের অনেক সুযোগ ও পরিসর রয়েছে। প্রয়োজন শুধু সঠিক ব্যবস্থাপনা, সদিচ্ছা এবং একতা। যদি আমরা সকলে ব্যক্তিগত রেষারেষি ভুলে, স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতার সঙ্গে কাজ করতে পারি, যদি মানুষের সেবা করার মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে আসতে পারি, তাহলে মহাবীর এনক্লেভের কালীবাড়ি আবারও বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির এক গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে।

অনেকে বলেন, বাঙালি কমে যাচ্ছে, বাংলা সংস্কৃতি হারিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, বাংলা বা বাঙালি কোনোদিন শেষ হবে না। সাময়িক ভাটা আসতে পারে, কিন্তু জোয়ার আসবেই। পীযূষের মতো একনিষ্ঠ, প্রতিভাবান এবং উদ্যোগী বাঙালিরা যতদিন আছেন, ততদিন বাংলা আবার শিরদাঁড়া উঁচু করে দাঁড়াবে। পীযূষের মতো আরও অনেক বাঙালির জন্ম এই মাটিতে হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও হবে। তারাই বাংলার ঐতিহ্যকে, বাংলার সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখবে – এই আমার দৃঢ় বিশ্বাস।

পীযূষ কেবল একজন কবি বা সম্পাদক নয়, সে একজন সংগঠকও বটে। তার মধ্যে মানুষকে একত্রিত করার, সকলকে নিয়ে চলার একটা সহজাত ক্ষমতা আছে। তার সম্পাদিত 'দেহলিজ' পত্রিকা বা তার সাহিত্যিক উদ্যোগগুলি দিল্লির বাংলা সাহিত্য জগতে এক নতুন প্রাণের সঞ্চার করেছে। এই কাজগুলো সহজ নয়, এর জন্য যে নিষ্ঠা, যে পরিশ্রম, যে একাগ্রতা দরকার, তা পীযূষের মধ্যে আমি দেখেছি। সে নীরবে, প্রচারের আলোয় না এসেও নিজের কাজটি করে যায়। প্রযুক্তির জ্ঞানকে সে সাহিত্যের কাজে লাগায়, যা এই ডিজিটাল যুগে অত্যন্ত জরুরি।

৫০এ পীযূষ,  শুভেচ্ছা ও আশীর্বাদ জানাই । দেখতে দেখতে আমাদের মহাবীর এনক্লেভের গর্ব, আমাদের স্নেহের কবি পীযূষকান্তি বিশ্বাস জীবনের পঞ্চাশটি বসন্ত পার করে ফেলল! সময় কত দ্রুত চলে যায়! মনে হচ্ছে এই তো সেদিনের কথা, মাতৃমন্দিরের আসরে ছেলেটির সঙ্গে প্রথম পরিচয় হয়েছিল। আজ সে বাংলা সাহিত্য জগতে নিজের একটা পরিচিতি তৈরি করেছে, সম্মান অর্জন করেছে। তার এই পঞ্চাশতম জন্মদিনে আমার পক্ষ থেকে রইল অনেক অনেক শুভেচ্ছা, আন্তরিক ভালোবাসা ও আশীর্বাদ।

পীযূষ, তুমি আরও বড় হও। তোমার মেধা, তোমার প্রতিভা আরও বিকশিত হোক। বাংলা সাহিত্যকে তুমি তোমার স্বপ্নের উচ্চতায় নিয়ে যাও। তোমার সাংগঠনিক প্রয়াস আরও সফল হোক। দিল্লির বুকে বাংলা সংস্কৃতির যে প্রদীপ তুমি জ্বালিয়ে রেখেছো, তা আরও উজ্জ্বল হোক। তোমার সুস্থ, সুন্দর ও দীর্ঘ জীবন কামনা করি। তোমার পরিবার – তোমার স্ত্রী বিউটি ও পুত্র ঋজুস্মিত – তারাও খুব ভালো থাকুক। আর হ্যাঁ, ভবিষ্যতে তোমার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বাংলা সংস্কৃতির জন্য কাজ করার যে ইচ্ছেটা আমার মনে আছে, আশা করি একদিন তা পূরণ হবে। ভালো থেকো, পীযূষ। অনেক বড় হও।