মধুমঙ্গল বিশ্বাস
ঠিকানা
মধুমঙ্গল বিশ্বাস
অলক্ষে থেকে কেউ আমার নাম ও ঠিকানা
জানতে চায়---
চায় মানে অনুরোধ নয়, রীতিমতো নির্দেশ
আমিও হাবলা, নাম বলতে কত গদতাদ
যতবার বলি---সে বলে বানান ঠিক করে বলো
আমি কি নিজের নামের বানান জানি না!
ঠিকানার প্রথমেই লিখি, কুটুমবাড়ি
সে বলে, কবে যাব?
খাওয়াদাওয়া হবে তো ঠিকঠাক!
আমি সম্মতিসূচক ঘাড় নাভি, আর
লিখি, মিলনপল্লি---
সে বলে, আরিব্বাস, লালন, গগন হরকরা
কে নেই! মনের মানুষ পাওয়া যাবে নিশ্চয়!
তারপর লিখি--ডাক: হৃদয়পুর
সে লাফিয়ে ওঠে--- এ তো রূপডাকঘর! হৃদয়পুর এখন নিশ্চয় শান্ত
জটিলতার খেলা সমাপ্ত হয়েছে আশা করি। আমি সবেতেই সায় দিই
আমি সবেতেই হাসি
মনে মনে বলি, আমি শক্তিতে আছি
দুর্বলেও আছি।
সে বলল, এটা কোনো ঠিকানা!
এ তো আত্মঘাতী চুল্লির চুম্বক--
যে আসবে সে-ই ডুববে
আমি বলতে চাইলাম, যে আসবে
সে মজে যাবে---
সে বলল, আমরা কি জাটিঙ্গা?
আমি বলতে চাইলাম, ফিনিক্স।
সর্বনাশ
শাড়িতে সুন্দর তুমি--
নগ্ন বিপজ্জনক।
তখন তোমার রূপ
আগুনের থেকে লেলিহান।
তখন যে-কোনো দিকে
সর্বনাশ ঘটে যেতে পারে।
কোন দিক সামলাব বলো
অগ্নিতে, প্লাবনে!
বুঝতে পারি না
বেসামাল হয়ে পড়ি
বুদ্ধিকে বলি, জাগ্রত হও
চিন্তা-চেতনাকে বলি, উদ্ধার করো মনিকর্ণিকাঘাটে জীবন্ত দগ্ধ আমি
চলচ্ছক্তিহীন---
সাহায্যের কোনো হাত
ভাবনার ইশারা কোনো
বুদ্ধির খেল
কিছুই সহায় নয় অনুভব করে
লেলিহান
ও নগ্ন
তোমাকে জড়িয়ে ধরে
দগ্ধ হতে হতে বলি
নিভে যাও শান্ত হও
ইপ্সার হোক চরম অর্গাজম।
ঘাম
তুমি বলছ, শরীর ঘামে ভেজা
আমি বলছি, হ্যাঁ
আমি বলছি, অসুবিধা কোথায়!
অস্বস্তি! নাকি আরও কিছু! ০
আমি ভাবছি বাবার কথা
আমি ভাবছি বাবাকাকাদের কথা
খেতে কাজ করে ঘর্মাক্ত বাবাকে বড়ো
গর্বিত দেখতাম
ওই ঘাম,
ওই ঘামের ফসল
আমাদের উদরে হাসি ফোটাত।
আমরা বাঁচলে, দেশ বাঁচে
দেশতো বাবাদের ঘামে বাঁচে, বলো!
Tags:
সিরিজ কবিতা