অলক জানা
অলক জানার তিনটি কবিতা
অলক জানা
উচিৎপুর
নিকাশি ব্যবস্থা জানান দেয় চরিত্র খুইয়ে বসে আছে এ মহল্লার সবকটা জলাশয়, মাঠে মাঠে এখন চনমনে ধানের ফিসফাস, শ্রমের জ্যামিতি সমাধানে এলে কাস্তের সুষুম্না বড়ো বেশি ধারালো হয়ে ওঠে। প্রতিবেদনটা এখানেই ইতি নয়, আমাদের কবিতাচর্চার আদলে তেমাথানী বালিচক স্টেশন ছাড়িয়ে রুট পালটে সবকটি ক্রাইমের মুখে চুমু খেয়ে আসে বেতাল বেহায়া কবিতারা,
সশব্দে প্রকাশটাই আসল দম, যে যার গুণের পরিচর্যার নিজস্ব উচিৎপুর ডাঁটে ডগমগ অফুরান, সেটাই স্বাভাবিক মেনে একটি সম্মতি সূচক দূরত্ব রাষ্ট্র ও জনতার জন্য বরাবর সুখকর।
চাবি
চাবি হারিয়ে গেলে দরজার মতো শরীরেরও মৃত্যু হয়, সেভাবেই একটা শুরু ছিল, বাগান তৈরি, অতীত সেখানে অতিথি হলে বড়বেশি বিড়ম্বিত সাম্প্রতিক পাতাবাহার----মাটির শিরা চেপে বসেছে মৌন মোরাম, কোথাও নিষ্ঠুর ঢালায়ের করমর্দন, নয়ানজুলি খানাখন্দ ডোবায় থিকথিকে ঘরোয়া শ্যাওলার স্বস্তিক পার্লামেন্টারি বসত, বিকেলের পাড়াবুলা কাকিমার মতো কিছু ছায়া যেখানে গল্প করে যায়। মন পড়ে থাকা মেদিনীপুরে গাছের চূড়ায় লালফুলের প্রস্রবণ, বসন্ত বিলাপ ! এসেই গেল দোল, তোমার কাটানো ছুটির মুহূর্তে আমিও মহানগরের রাস্তায় একা একা ছায়ার সঙ্গে পেরিয়ে যাই রবীন্দ্রসদন, দ্বিতীয় হুগলী সেতুর শৃঙ্খলা। গাছের সারিতে মরা গাছ অথবা ব্যস্ততায় পোশাক নিতে গা ঘেষে অনিচ্ছাকৃত আরো দু-একটির মেঝেপতন মনে রাখার মতো নয়, সর্বাধিক মনোযোগের নাম চাবি, যদি উবে যায় ?
যদি হারিয়ে যায় সেই স্মৃতি হীন শরীর একটি ধ্বংসাবশেষের নাম।
বেতাল মাত্রা
হঠাৎ মেজাজ জুড়ে হুটহাট ঢুকে পড়ে আস্ত একটা এডুলেশন পিরিয়ড, তিথিহীন কোন বালিকার বড়ো হওয়া হঠাৎ মেঘ থেকে ঝরে পড়া ঝিলমিল রোদ ভেজা বৃষ্টি, ঝালমুড়ি বিকেল ও নদী পরিমনি কেলেঘাইয়ের কোমরবিছে বাঁশের সাঁকোয় ফুসফুস ভর্তি শ্বাস দেদার অবিকল। ময়দানে তখন সরকার ও বিরোধীর চাপান উতোর ঘৃণা ছোঁড়াছুঁড়ি, না মনে রাখা কুকুরের সেক্স। চৈত্র সেলে পুড়ে যাওয়া ভবিষ্যৎ ধুঁকছে, ব্যাঙ্কে ঋণের মস্ত বোঝা সবে ঘরের ছাদ, চিলেকোঠা জড়ানো ত্রিপল আদর, ডাঁট করে বলা সাকারের বউ তার ড্যানড্রফ চুলে আটকে যায় ফুরফুরে হাওয়া। কি বিষাদ কি আতান্তরে ঘা মেরামতের জৌলুস, মরণ পাতার ফাঁকে উঁকি মারে প্রত্যয়, নতুন আবাস যোজনার মতো দারুণ কৃষ্ণচূড়া।