মানসী কবিরাজ

 

মানসী কবিরাজের কবিতা

মানসী কবিরাজ




অণ্বেষণ

তাকে আম দেখিনি কখনও । দেখিনি তার ঘন উত্তলে
জেগে আছে নাকি কোনও জন্ম-জড়ুলও ! মাদুরের ভাঁজ খুলে গেলে
বাঁশিতে সে ফুঁ দেয় কিনা ! কিংবা ফটিক জল চাখবার কালে
চোখ তার বন্ধ না খোলা ! কিছুই দেখিনি
তবু …..


অপেক্ষা করি ।
যেন সে আসলেই , চইচই হাঁস হবে
বিকালের ঘাটে ! যেন এই সন্ন্যাস তেতে পুড়ে
ছাই হবে বলে , তার গুপ্ত গলিতে
দাউ দাউ রাখা আছে , আগুনের গোলা !

যেন এই রসুইয়ের যত নুন সবটাই
শুষে নেবে বলে , মধ্যমায় পরে আছে সে
উদ্দাম ক্যারাটের নীলা …

শধু ভিতর চাতাল জানে
সে নয়
নিজেরই অপেক্ষা লিখি অলীক খিলানে
বাকি সব ব্রজ- মরীচিকা !




মায়ামৃগ

প্রবল জ্বরে ভিতর কাঁপে
ঘোর পিপাসা । তৃষ্ণা খোঁজে জলের মলম
দুহাত পাতা । হাতের রেখায় সময় লেখা
ললাট লিপি । যায় ফুরিয়ে আয়ুর হিসাব
বোঝার আগেই । তবুও কেমন ঠাই দাঁড়িয়ে
লোভীর মতো । দিন কেটে যায়
আশায় আশায় ...

দৃশ্য নানা ।
দৃশ্যরা সব নড়েচড়ে। চলন শুরু ।
পথ সোজা নয় । অচিন বাতাস
নতুন দাওয়া । দাওয়ায় পাতা আসনপিঁড়ি
বসন্ত ফুল । চলতে গিয়েও পা থেমে যায়
শঙ্কা নানা । জ্বরে ভিতর জ্বরটি কাঁপে
প্রবল ভাবে । নাছোড় চেতন তবুও খোঁজে
কোমল নরম । অন্ধকারে ফুঁসলে ঢোকা
আলোর মতোন , আসবে কী সেই মোহন বেশের
ইষ্টিকুটুম ! না চাইতেই বাড়িয়ে দেবে
জাদুর ঝাঁপি ।
খুলবে চাবি । খুলবে তালা
জিয়ন কাঠি!!




এ জীবন বৈচিত্রময়
 
পাখি এসে বসে থাকে
শীতের
সকালে …
আমি পাখিটিকে দেখি । পাখিদের দেখি
দূরবীনে …

ডিম বাসা কিছুই জানি না । শুধু জানি
চেনা জানা প্রান্তর থেকে
চলে গেছ …
বহুদিন
প্রচণ্ড দূরে ।

ন্যাতানো ছবির মতো শুধু
ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে
তাহাদের
বিষ্ঠা ও বমি । তার উপরে
মাছি ।

ঝাঁক ঝাঁক মাছি । আহা ! তাকেই জীবন ভেবে
মাদুর পেতেছি …




অভয়ারণ্য

প্রভুপাদ বললেন হেসে ,
হোক এবারে
বিশেষ কিছু অরণ্যের দিন রাত্রি হোক
শিল্পী কলম ডুবিয়ে তার
আঁকলেন বাঘ
আঁকলেন অবোধ নরম শিশু ছাগ
পাখির বাসার পাশেই ,ফণাধর
অনন্ত নাগ ......

বিধিবদ্ধ খাঁচার ভিতর
পড়ে থাকে
হাড়গোড়
পড়ে থাকে
ভাঙা খোসাখানা ...
টিকিট কেটে দলে দলে
ভিড় করে পরিযায়ী মানুষের জামা
জমে যায় মেহফিল । জমে যায়
গান ও বাজনা !



নবান্ন

হেমন্ত এসে
বাসা বোনে আঙুলে আঙুলে । হাইওয়ের ধারে ভরে আছে ধান-মাঠ । 
ভরপুর । ভরপুর । আদুরে সোনালী ।
পাখি আসে
খুঁটে খায় । দোল খায় ।
হেসে ওঠে মাঠ । ধান হাসে । পাখিও ।

পাখিতাড়ুয়াটির গায়ে সোয়েটার । কালো মুখে হিমের লোশন ।
সে পাখিকে দ্যাখে না । মাথার উপরে নিয়ে বসে থাকে …
হেমন্ত হেঁটে যায় পতঝড় দিয়ে । পাখিটিকে খোঁজে । পাখি খোঁজে
পাখিতাড়ুয়াকে …

নতুন চালের ঘ্রাণ চুঁয়ে চুঁয়ে পড়ে মানুষ-মানুষীর
সংসারী ঘরে